× home হোম archive আগের ওয়েব সংখ্যা panorama ডুয়ার্স সম্পর্কে play_circle_filled ভিডিও file_download মুদ্রিত সংখ্যার পিডিএফ library_books আমাদের বইপত্র
people এখন ডুয়ার্স সম্পর্কে article শর্তাবলী security গোপনীয়তা নীতি local_shipping কুরিয়ার পদ্ধতি keyboard_return বাতিল/ফেরত পদ্ধতি dialpad যোগাযোগ
login লগইন
menu
ad01112021081913.jpg
আংসাং কথা - ২

ঠাকুর পঞ্চানন বর্মার স্নেহধন্য উত্তরের প্রথম সাংসদ উপেন্দ্রনাথ বর্মনকে কজন জানি?

শুভ্র চট্টোপাধ্যায়
No idea about Upendra Nath Barman?

উপেন্দ্রনাথ বর্মন তখন কোচবিহারে ভিক্টোরিয়া কলেজের ছাত্র। একদিন কলেজ থেকে নোটিশ দিয়ে জানালো যে, জাত অনুযায়ী ছাত্রদের খাবার ঘর আলাদা করা হয়েছে। "The smaller dining hall is reserved for Brahamines, the bigger dining hall is for Kayasthes and Vaidyas, and the other hall is for others, for taking their meals." এই নিয়ে প্রতিবাদ শুরু হলো। কলেজের শিক্ষকরা ডাইনিং বিভাজন নিয়ে অনড়। কিন্তু উপেন্দ্রনাথও ছাড়ার পাত্র ছিলেন না। সংঘাত শেষে এমন জায়গায় পৌঁছয় যে সুপার ফনিবাবু অগ্নিশর্মা হয়ে কঠোর শাস্তির হুমকি দিলেন।

উপেন্দ্রনাথ এই অবস্থায় প্রথমেই কুচবিহারের তৎকালীন রাজা জিতেন্দ্র নারায়নের কথা ভেবেছিলেন। কিন্তু তিনি তখন বিলেতে। এরপর উপেন্দ্রনাথ সোজা ব্যাটে খেললেন। একটা দরখাস্ত লিখে পকেটে পুরে সোজা হাজির হলেন হ্যামন্ড সাহেবের কুঠিতে। সাহেব হলেন সুপারদের সুপার, একেবারে "স্টেট সুপার"।

হ্যামন্ড সাহেব আবার আগের দিন গিয়েছিলেন যুবরাজ হিতেন্দ্র নারায়ন এর সাথে বাঘ শিকারে। বেলা বারোটায় শিকার পর্ব সেরে কুঠিতে ফিরে এসে জিগ্যেস করলেন, হোয়াট ডু ইউ ওয়ান্ট?

দরখাস্ত পড়ার পর তাঁর ভুরু কুঁচকে গেল। ভিক্টোরিয়া কলেজের প্রিন্সিপালকে নির্দেশ দিলেন।  সুপারের নোটিশকে খারিজ করে দিয়ে প্রিন্সিপাল বলে দিলেন, ছেলেটির বাবাকে জানিয়ে দাও "Victoria College is not for those who observe cast distinction."

সংগ্রামে জয়লাভ করার পরেও উপেন্দ্রনাথের মনে অবশ্য একটা দুঃখ থেকে গিয়েছিল। যে ইংরেজদের বিরুদ্ধে তাঁরা লড়ছেন, শেষকালে কিনা সেই ইংরেজেরই সাহায্য নিতে হলো!

উপেন্দ্রনাথ বর্মন একশো চব্বিশ বছর আগে কোচবিহার রাজ্যের একটি গ্রামে জন্মেছিলেন। নিজের বাল্যস্মৃতি প্রসঙ্গে তিনি লিখেছেন, "বাল্য স্মৃতির যে কথা সবচেয়ে আগে মনে পড়ে তা হইল দুধ-ঘির কথা। ইংরেজিতে কোনও দেশের প্রশংসায় বলা হয় flowing with milk and honey. একদিন উত্তরবঙ্গ সম্পর্কে এই অভিধা ছিল সত্য।" উপেন্দ্রনাথ এর জন্ম সচ্ছল পরিবারে। ভূসম্পত্তি ছাড়াও তাদের পূর্বপুরুষের ভালো ব্যবসা ছিল ভোটানের সাথে।

রাজবংশী জোতদারেরা যথেষ্ট প্রজাবৎসল ছিলেন। অতিথি আপ্যায়নে, উৎসব অনুষ্ঠানে  দু-হাত খুলে খরচ করতেন। অন্যদিকে ছিলেন ভয়ানক মামলাপ্রেমী। তুচ্ছ কারণে শহরের উকিলকে ফিজ দিয়ে সর্বস্বান্ত হয়েছেন এমন জোতদার পরিবারের সংখ্যা  কম নয়। মাত্র এক প্রজন্মেই জোতদারের উত্তরসূরী শহরে এসে শ্রমিক হয়েছেন, সে উদাহরণও অনেক।

বিত্তশালী জোতদার পরিবারগুলি সে কালে ইংরেজি শিক্ষার প্রতি উদাসীন ছিলেন। সুতরাং উপেন্দ্রনাথ বর্মনের উচ্চশিক্ষা লাভ একটি ব্যতিক্রমী বিষয়। মাথাভাঙ্গা হাই ইংলিশ স্কুলের জন্য ছাত্র জোগাড় করতে গিয়ে স্কুলের ছাত্র প্রতিনিধিরা তাঁর পিতা বীরনারায়ণ বর্মন-এর কাছে আসেন। বালক উপেন্দ্রনাথ তখন দুই মাইল হেঁটে কেশরী বাড়ি মডেল স্কুলে বাংলা শিখতে যান। মাথাভাঙ্গায় হোস্টেলে থাকা নিয়ে সামান্য দ্বিধাদ্বন্দ্বের পর অনুমতি মিলল।

কলেজে পড়ার সময় তিনি একদিন শ্বশুর বাড়ি গিয়ে শুনলেন যে দুই মাইল দূরে রায়চেঙ্গিতে  ঠাকুর পঞ্চানন বর্মা ভাষণ দেবেন। উনিশ বিশা তালুকের খগেন্দ্রনাথ পাটোয়ারী ছিলেন তার শ্বশুর মশাই। তাঁর দাদা পদ্মনাথ পাটোয়ারী গ্রামের উন্নতির জন্য বিশেষ দক্ষতা প্রদর্শন করায়  কুচবিহারের মহারাজা তাঁকে "চৌধুরী" উপাধিতে ভূষিত করেন। রায়চেঙ্গির সেই সভায় "রায় সাহেব" দু'ঘণ্টার বক্তৃতায় ক্ষত্রিয় সমিতির উদ্দেশ্য সম্পর্কে ভাষায় বক্তব্য রাখার পর উপেন্দ্রনাথকে চমকে গিয়ে বললেন "উপেন, এলা তুই ক।"

সেইদিনই গুরু তাঁর শিষ্য সম্পর্কে নিশ্চিত হয়েছিলেন।

সে কালের বিত্তশালী রাজবংশী জোতদার পরিবারগুলি পাশ্চাত্য শিক্ষার বিষয়ে আগ্রহী হলে উপেন্দ্রনাথ-এর সুবিধা হত। তবে তাঁর জীবন কাহিনী বেশ রোমাঞ্চকর। কোচবিহার নেটিভ স্টেট হওয়ায় প্রায় রাজনীতি নিষিদ্ধ ছিল। উপেন্দ্রনাথ জলপাইগুড়ি চলে আসেন সম্ভবত সেই কারণেই। একশ বছরের পুরনো জলপাইগুড়ির পটভূমিতে একটি উপন্যাস লিখতে গিয়ে সেখানে বেশ কিছু বাস্তব চরিত্রকে টেনে এনেছিলাম। সেখানে উপেন্দ্রনাথ বর্মনও একটি চরিত্র। তবে যেই বাস্তব চরিত্রটিকে মূল ঘটনার ঘনঘটায় জড়িয়ে দিয়েছিলাম, তাঁর নাম তারিণী বসুনিয়া।

এইসব চরিত্রগুলির মধ্যে অনেক চিত্রনাট্য ঘুমিয়ে আছে।

ঊপেন্দ্রনাথ বর্মন. সৌজন্যে ThePrint

করোনা কালের প্রতিবেদন ফ্রি রিডিং

Disclaimer: Few pictures in this web magazine may be used from internet. We convey our sincere gratitude towards them. Information and comments in this magazine are provided by the writer/s, the Publisher/Editor assumes no responsibility or liability for comments, remarks, errors or omissions in the content.
Copyright © 2025. All rights reserved by www.EkhonDooars.com

Design & Developed by: WikiIND

Maintained by: Ekhon Dooars Team